আসছে জোড়া বাছুর উৎপাদন

Published: 25 October 2020

বিশেষ সংবাদদাতা, ঢাকা : সাধারণত গাভি বছরে একটি বাছুরের জন্ম দেয়। তবে ভ্রূণ স্থাপন প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি গাভির গর্ভ থেকে জোড়া বাছুর উৎপাদনে সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট। ইনভারট্রো অ্যামব্রায়ো প্রডাকশন বা আইভিপি প্রযুক্তিটি অচিরেই মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার আশা করছেন গবেষকরা। খবর : বিডিনিউজ।

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথুরাম সরকার বলেন, ‘জোড়া গরু উৎপাদনে গত বছর আমরা সাফল্য পেয়েছি। এটা গবেষণার বিষয়। এর অগ্রগতি আছে। তবে এটা নিশ্চিত যে আমরা জোড়া বাছুর জন্মানোর প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছি।’

দুই বছর আগে আইভিপি প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি গাভি থেকে দুটি বাছুর জন্মানোয় সফল হন গবেষকরা। এরপর গত বছর আরও একটি গাভি থেকে জোড়া বাছুরের জন্ম দেওয়া হয়। মাঠ পর্যায়ে ভ্রূণ স্থাপনে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সরঞ্জামের স্বল্পতা ছিল; তবে এখন তাও কিছুটা কাটিয়ে ওঠা গেছে বলে জানিয়েছেন এক গবেষক। ইনস্টিটিউটের নিজস্ব তহবিল থেকে গবেষণার খরচ মেটানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গবেষক দলের প্রধান ড. গৌতম কুমার দেব। চার বছরের টানা গবেষণার ফলে তারা এ সাফল্য অর্জন করেছেন। কবে নাগাদ এ প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ করা সম্ভব হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে আগামী বছরের প্রথম দিকে আমরা কয়েকজন খামারির মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে যাব। চলতি বছর যাওয়ার কথা ছিল। তবে আমরা অনেক গবেষণা একসঙ্গে করি, জোড়া বাছুর জন্ম দেওয়ার ব্যাপারটাও আমারা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। ছোট ছোট অনেক যন্ত্রপাতি আছে যা বিদেশ থেকে আনতে হয়, সেগুলো আনার চেষ্টা করছি।’ আইভিপি প্রযুক্তিতে জন্মানো বাছুরগুলো বর্তমানে পরিণত বয়সে পৌঁছেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এদের এখন বাচ্চা জন্ম দেওয়ার সময় চলে এসেছে, তবে এদের মধ্যে ভ্রূণ স্থাপন করা হয়নি।’

গবেষক গৌতম কুমার দেব বলেন, ‘এ প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে ব্যবহারের জন্য দাতা গাভি থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ ও ভ্রূণ ক্রায়োপ্রিজারভেশন প্রযুক্তির ব্যবহার প্রয়োজন। এজন্য প্রয়োজন হবে কোনো দুধেল গাই বা উচ্চ উৎপাদনশীল জাতের গাভি। আমরা প্রথমে ওই গাভি থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করব। সেই ডিম্বাণু ল্যাবে পরিপক্ব, নিষিক্তকরণ এবং কালচার শেষে তা ভ্রূণে পরিণত করা হয়। সাত দিন ল্যাবে থাকার পর অপেক্ষাকৃত দুর্বল বা দুধ কম দেয় এমন গাভির জরায়ুতে তা স্থাপন করা হয়। এভাবে নির্ধারিত সময়ে ভ্রূণ বেড়ে ওঠে। কমবেশি ১০ মাসের মধ্যে সেই গাভি থেকে দুটি বাছুর পাওয়া যায়।’